পৃথিবীর কোন দেশ কিসের জন্য বিখ্যাত?
জাতিসংঘের স্বীকৃত দেশ ১৯৩ টি হলেও, বর্তমানে পৃথিবীতে মোট ২০৬ টি দেশ রয়েছে। এই সকল দেশগুলোর মধ্যে একেক দেশ একেক কারণে বিখ্যাত। কোনো দেশ বিখ্যাত অধিক বিবাহবিচ্ছেদের কারণে, কেউ আবার তাদের খাবারের কারণে। কোনো দেশ বিখ্যাত প্রচুর ইন্টারনেটের ব্যবহারের জন্য, আবার কোন দেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত।
আমেরিকা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকা বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্যের জন্য পৃথিবীর কাছে সুপরিচিত লাভ করেছে। জানা যায়, পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিমানবন্দর আছে দেশটিতে। এ দেশে সর্বমোট ১৯ হাজার ৬২২টি বিমানবন্দর আছে। যার মধ্যে পাবলিক বিমানবন্দরের সংখ্যা ৫ হাজারেরও বেশি। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটজন নারী বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতায় বিজয় মুকুট জিতেছেন এবং এটিই এ পর্যন্ত সর্বোচ্চবার বিজয়ী হওয়া দেশ। এর আগে এতো বেশি মুকুট আর কোন দেশ জিতেনি।
ভারত
অন্যদিকে মাংস খাওয়ার দিক দিয়ে পৃথিবীর কাছে পরিচিতি পেয়েছে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। তবে বেশি নয়, কম মাংস খাওয়ার দিক দিয়ে ভারত এগিয়ে। জানা যায়, পৃথিবীর অন্য সব দেশের চেয়ে কম মাংস খেয়ে থাকেন ভারতীয়রা। প্রত্যেকটি মানুষ প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৪ কেজিরও কম মাংস খেয়ে থাকে! দেশটির অধিকাংশ নাগরিক নিরামিষভোজী। তবে এদেশে বাসস্থান, খাবার, পানি, পরিবহন, পোশাক, ট্যাক্সি ভাড়া, আনন্দভ্রমণ, ইন্টারনেট কিংবা ফোন বিল সবকিছুর খরচই অন্য দেশে তুলনায় অনেক কম। তাই স্বল্প খরচে জীবিকা নির্বাহ আর অবকাশযাপনের জন্য অনেকেই এ দেশটিকে বেছে নেন।
মালদ্বীপ
আবার মধুচন্দ্রিমা উদযাপনের জন্য মালদ্বীপ সবচেয়ে আকর্ষণীয়। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মধুচন্দ্রিমার পাশাপাশি অধিক বিবাহবিচ্ছেদের কারণেও তারা জায়গা করে নিয়েছে গিনিস বুক অব রেকর্ডসে। জানা যায়, এদেশে বিবাহবিচ্ছেদের হার বছরে প্রায় ১০ দশমিক ৯৭ শতাংশ! জাতিসংঘের করা এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদেশে একজন নারীর ৩০ বছরের মধ্যে তিনবার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বাল্যবিবাহ, বিচ্ছেদের সহজ আইন, এমন অনেক কারণ রয়েছে এ বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে।
ফ্রান্স
অন্যদিকে ফ্রান্স বিখ্যাত পর্যটক সমাগমের কারণে। কারণ পৃথিবীর অন্য সব দেশের তুলনায় পর্যটক সমাগমের দিক থেকে ফ্রান্স সবচেয়ে এগিয়ে। এর কারণ এদেশের নয়নাভিরাম পাহাড়, সমুদ্র সৈকত, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও সুস্বাদু খাবার পৃথিবীর প্রায় সব দেশের নাগরিককেই আকর্ষণ করে। ২০১৫ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৮ কোটি ৪৫ লাখ ভ্রমণপিপাসুদের সমাগম ঘটে ফ্রান্সে।
নেদারল্যান্ডস
দৈহিক উচ্চতার জন্য নেদারল্যান্ডস বিখ্যাত। নেদারল্যান্ডসের জনগণকে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা জাতি বলা হয়। এদেশে জন্ম নেওয়া অধিকাংশ মানুষই অনেক লম্বা হয়ে থাকেন। একজন ডাচ নাগরিক সাধারণত ৬ ফুটেরও বেশি লম্বা হতে পারেন। আর দেশটির নারীদের উচ্চতা গড়ে ৫ ফুট ৫ ইঞ্চিরও বেশি।
মেক্সিকো
অন্যদিকে পরিশ্রমের দিক থেকে মেক্সিকো এগিয়ে। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি পরিশ্রমী মেক্সিকোর জনগণ। ওইসিডি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর একজন মেক্সিকান গড়ে ২ হাজার ২৫৫ ঘণ্টা তথা সপ্তাহে প্রায় ৪৩ ঘণ্টা কাজ করেন।
মিশর
মিসর পৃথিবীর কাছে সুপরিচিত তার সুউচ্চ পিরামিডের জন্য। এছাড়াও আছে সুপ্রাচীন নিল নদ। আবার শস্য উৎপাদনের জন্য এর উর্বর কূলবর্তী ভূমিসমূহের জন্যও মিশর পৃথিবীতে সুপরিচিত লাভ করেছে।
ফিনল্যান্ড
অন্যদিকে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকার প্রথমে রয়েছে ফিনল্যান্ড। ২০২৩ সাল নিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় প্রথম হয়েছে দেশটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে দেশটি সবচেয়ে স্থিতিশীল, একই সাথে সবচেয়ে মুক্ত এবং সবচেয়ে নিরাপদ দেশের তকমা পেয়েছে।
ফিনরা বেশি সুখী হওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন-নিম্ন বেতন বৈষম্য, উচ্চ সামাজিক সমর্থন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা এবং কম দুর্নীতি সহ একাধিক কারণ রয়েছে, যা দেশটিকে সুখি দেশের তালিকায় স্থান করে দিয়েছে।
চীন
ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক থেকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় চীন অনেক এগিয়ে। ডাটা লিডসের করা এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক সময় চীনে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল সংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ কোটি ২০ লাখে। দেশটিতে ইন্টারনেটের সহজপ্রাপ্যতা শতকরা ৫৫ দশমিক ৮ ভাগ।
নরওয়ে
অন্যদিকে নরওয়ে বিখ্যাত তাদের নিরাপদ সড়কের জন্য। আওয়ার ওয়াল্ড ইন ডাটা এবং গবট.ইউকে এর এক তথ্য অনুযায়ী, দেশটি প্রতি ১ লক্ষ জনে ১.৫ জন কেবল ট্রাফিক সমস্যার কারণে মারা যান।