বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত কয়েকটি সিঁড়ি

 বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত কয়েকটি সিঁড়ি

পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা অদ্ভুত জিনিস। যেগুলোর কিছু প্রাকৃতিকভাবে তৈরি, আর কিছু মানুষের তৈরি। আজ আমরা আলোচনা করবো মানুষের তৈরি বিশ্বের কিছু অদ্ভুত সিঁড়ি নিয়ে।

সূচিপত্র:-

  • চাঁদ বাউড়ি কুয়া
  • সিগিরিয়া রক
  • মাউন্ট হুয়াশান
  • স্ট্যাচু অব লিবার্টি
  • অ্যাংকর ভাট মন্দির
  • ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অফ আর্ট
  • কুইন্টা ডা রিগালেরিয়া

চাঁদ বাউড়ি কুয়া

ভারতের অন্যতম প্রাচীন দর্শনীয় স্থান হল, রাজস্থানের "চাঁদ বাউড়ি কুয়া"। কুয়াটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, এর সিঁড়ি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এটি প্রায় ১৩ তলা বাড়ির সমান উঁচু। এতে সর্বমোট, ৩৫০০ টি সরু সিঁড়ি আছে।


সুন্দর জ্যামিতিক নকশার সঙ্গে, এই সিঁড়ি নীচের দিকে নেমে গেছে। সিঁড়ির একেবারে নীচে আছে, গাঢ় সবুজ রঙের সুপেয় জল। এই বাউরি এবং এর সিঁড়ি গুলো, হলিউডের ছবি “দ্যা ডার্ক নাইট রাইজার্স” এ দেখানো হয়েছে।

  

বিশ্বের সবচেয়ে অদ্ভুত কয়েকটি সিঁড়ি

সিগিরিয়া রক

শ্রীলঙ্কার অপূর্ব সুন্দর গুহামন্দির," সিগিরিয়া রক"। মৌমাছির চাকের মতো দেখতে, এ রকের আরেক নাম হলো "লায়ন রক"। লায়ন রকে রয়েছে, ২০০ মিটার উঁচু, বিশালায়তনের এক পর্বতের সিঁড়ি। এটি একসময় আকাশ দেখার জন্য তৈরি করা হয়েছিলো। 


পরবর্তীতে, ১৪শ শতক পর্যন্ত, এটি বৌদ্ধ বিহার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই "সিগিরিয়া সিঁড়িপথের" আছে, ১২০০টি ধাপ। যা ইউনেস্কো ঘোষিত, বিশ্ব ঐতিহ্যের একটি স্থান। এই সিঁড়ি বেয়ে উঠাটা বেশ শ্রমসাধ্য হলেও, উঠার পরে প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করলে, মন জুড়িয়ে যায়।


মাউন্ট হুয়াশান

হুয়াইন শহর থেকে, ১২০ কিমি পূর্বে অবস্থিত "মাউন্ট হুয়াশান",  চীনের পাঁচটি বৃহত্তম পাহাড়ের মধ্যে একটি। 

সেখানে রয়েছে, প্রায় ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের, অদ্ভুত এক সিড়ি। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গাগুলোর মধ্যে, অন্যতম একটি।


পাহাড়ের পশ্চিম দিকের চূড়ায়, খ্রীষ্ট ধর্মের অবির্ভাব হওয়ারও প্রায় ২শত বছর আগে, প্রথম একটি মন্দির স্থাপন করা হয়। মন্দিরে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে হয়, এই বিপজ্জনক সিঁড়ি। অনেকেই বিশ্বাস করেন, পাহাড়ের চুড়ায় এমন একটি গাছ জন্মে, যা মানুষকে অমরত্ব দান করে। যদিও, এর কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি এখনো।


স্ট্যাচু অব লিবার্টি

"স্ট্যাচু অব লিবার্টির" পুরো মূর্তির মধ্যদিয়ে, একটি সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। যেটা দিয়ে, মাটি থেকে একদম ওপরের মশাল পর্যন্ত যাওয়া যায়। মূর্তির মাথায় চড়তে ব্যবহার করা হয়, একটি প্যাঁচানো সিঁড়ি। যে সিঁড়ি, প্রায় ২০ তলা দালান বেয়ে উঠার মতোই।


মুকুটের কাছে পৌঁছাতে, দর্শকদের ৩৫৪টি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে।  এটা চিন্তা করেই, কারো  কারো ঘাম ছুটে যায়। অথচ এই সরু আর বিশাল সংখ্যার সিঁড়িকে পেরিয়ে, অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষরা, প্রতিদিনই চড়ে বসেন মূর্তির মাথায়।


অ্যাংকর ভাট মন্দির

"অ্যাংকর ভাট" কম্বোডিয়ার অ্যাংকরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মধ্যযুগীয় মন্দির। ক্যাম্বোডিয়ার প্রতীক হিসেবে, এটি সে দেশের পতাকায় অঙ্কিত থাকে। পাঁচটি সুউচ্চ স্তম্ভের এই স্থাপনাটি, বিশ্বের ইতিহাসে, অন্যতম বৃহৎ মন্দির হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১,১৫০ মিটার দৈর্ঘের মন্দিরটির সিঁড়িগুলো, ভীষণ অদ্ভুত রকমের।


এ মন্দিরের সিঁড়িগুলো এমন খাঁড়া, যে সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠা বা নিচে নামা, একটা দুঃস্বপ্নের মতোই। এ সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হলে, রীতিমতো হামাগুড়ি দিতে হয়।


ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অফ আর্ট

"ফিলাডেলফিয়া মিউজিয়াম অফ আর্ট"-এ ওঠার সিঁড়িটি দেখলে, অনেকের কাছেই মনে হবে যেনো  কোনো চিত্রকর্মের প্রদর্শনী চলছে।  কারণ সিঁটিটিতে রয়েছে, বিখ্যাত চিত্রকর "সালভাদর ডালির" প্রতিকৃতি। ২০০৫ সালে, একটি প্রদর্শনীর সময়ে এটি নির্মাণ করা হয়।


কুইন্টা ডা রিগালেরিয়া

পর্তুগালের Sintra অঞ্চলে নির্মীত হয়েছে, ১৫ তলা বিশিষ্ট একটি কুয়া,যা মাটির নিচে অবস্থিত। মাটির নীচে ১৫ তলা বিশিষ্ট, এই কুয়াটির নীচের দিকে যাওয়ার জন্য রয়েছে, প্যাঁচানো সিঁড়ি। কুয়াটির নাম দেয়া হয়েছে, "কুইন্টা ডা রিগালেরিয়া"। ১৯০৪ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে, এর কাজ শেষ হয়, ১৯১০ সালে। প্রতি বছর অনেক পর্যটকই, এখানে ঘুরতে আসেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url