মহাকাশ থেকে দেখা যায় পৃথিবীর যেসব জায়গা।
পৃথিবীতে এমন কিছু আশ্চর্যজনক স্থান আছে যেগুলো মহাকাশ থেকেও দৃশ্যমান হয়। চলুন জেনে নেই তেমনই কিছু জায়গা সম্পর্কে।
সূচিপত্র:
- মিশরের গিজার পিরামিড
- হিমালয়
- গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
- আমাজন
- দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ
- দুবাইয়ের পাম আইল্যান্ড
- টেমস নদী
মিশরের গিজার পিরামিড
এগুলোর মধ্যে প্রথমেই আসে মিসরের রহস্যময় গিজার পিরামিডের নাম। এর রহস্যজনক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে, যুগ যুগ ধরে চলছে গবেষণা। এটি মিসরের সবচেয়ে বড়, পুরনো ও আকর্ষণীয় পিরামিড। যা কিনা খুফুর পিরামিড হিসেবেও পরিচিত। এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট।
প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বছর আগে, প্রাচীন মিশরীয়রা এই পিরামিড নির্মাণ করেন। ২০০১ সালে নাসার মহাকাশচারীরা প্রথম মহাকাশ থেকে গিজার পিরামিডের ছবি তোলে।
হিমালয়
মহাকাশ থেকে দেখা যায় এমন আরেকটি স্থান হলো হিমালয়। এশিয়ার এ পর্বতমালা অনেকগুলো পর্বতের সমন্বয়ে গঠিত। যা ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান ও চীন এই পাঁচটি দেশে এটি বিস্তৃত। প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতার ১০০টিরও বেশি পর্বতচূড়া এবং ২৬ হাজারেও বেশি উচ্চতার ১৪টি পর্বতচূড়াসহ হিমালয় পর্বতমালা গঠিত।
তুষার-ঢাকা হিমালয়ের, সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ‘মাউন্ট এভারেস্ট’। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এ বিষ্ময়কর পর্বতমালা নিয়ে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের কৌতুহলের শেষ নেই। হিমালয় জয় করতে গিয়ে বিশ্বের অনেক পর্বতারোহীই সফল হয়েছেন। আবার অনেকে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি জীবনও হারাতে হয়েছে অনেকের। রহস্যময় এই হিমালয় দেখা যায় মহাকাশ থেকেও। স্যাটেলাইটের ছবিতে ধরা পড়ে হিমালয়ের পর্বতচূড়াগুলো।
গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত "গ্রান্ড ক্যানিয়ন", পর্যটকদের কাছে বিস্ময়ের নাম। সারা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সুন্দর গিরিখাত এটি। যা পৃথিবীর প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও পৃথিবীর সর্বোচ্চ গিরিখাত নামেও পরিচিত এটি। এর মধ্য দিয়েই "কলোরাডো নদী" বয়ে গেছে।
"গ্রান্ড ক্যানিয়ন গিরিখাত" দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৭৭ মাইল এবং প্রস্থে সর্বোচ্চ ১৮ মাইল। পৃথিবী থেকে এটি পুরোপুরিভাবে দেখা না গেলেও মহাকাশ থেকে পুরো গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, একসাথে দেখা যায়। মহাকাশ থেকে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে সর্পিল আঁকাবাঁকা নদীর মতো মনে হয়।
আমাজন
বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী "আমাজন"। দক্ষিণ আমেরিকার ৯টি দেশের মধ্যে বিস্তৃত এটি। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার। আমাজন নদীর বেশিরভাগ অংশই পৃথিবীর বিখ্যাত "আমাজন" জঙ্গলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীতে বাসকরে, পৃথিবীর বিভিন্ন ভয়ঙ্কর ও বিষাক্ত প্রাণী।
আমাজনের অগভীর জলের মাঝে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ "অ্যানাকোন্ডা"। মহাকাশ থেকে এ নদী দৃশ্যমান হয় ঠিকই। তবে অবাক করা বিষয় হলো এটি এতোটাই দীর্ঘ যে, স্যাটেলাইটও এই নদীর পুরো ছবি ক্যাপচার করতে সক্ষম হয়নি ।
দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ
পৃৃথিবীর আরেকটি প্রাকৃতিক সপ্তাচর্যও দেখা যায় মহাকাশ থেকে। আর তা হলো অষ্ট্রেরিলার "গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ"। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ২৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। যা প্রায় ২৫০০ পৃথক প্রাচীর ও ৯০০ টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ "দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ" পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর। এর অপার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় মহাকাশ থেকেও।
দুবাইয়ের পাম আইল্যান্ড
দুবাইয়ের "পাম আইল্যান্ডটি" বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় একটি জায়গা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূলে অবস্থিত এটি। দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স "মোহাম্মাদ বিন রশীদ আল মাখতুম" এ দ্বীপের পরিকল্পনাকারী। পাম গাছের মত আকৃতি বলেই একে ‘পাম আইল্যান্ড’ বলা হয়।
খেজুর গাছের আকৃতির, কৃত্রিম দ্বীপ 'দ্য পাম আইল্যান্ড' তৈরি করতে বারো কোটি কিউবিক মিটার বালু লেগেছিল। দ্বীপটি ৩টি কৃত্রিম দ্বীপ পাম জুমেইরাহ, পাম দেইরা ও পাম জেবেল আলির সমষ্টি। বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকৌশল প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি একটি। বিশ্বের বৃহত্তম এ কৃত্রিম দ্বীপও মহাকাশ থেকে দেখা যায়।
টেমস নদী
ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত "টেমস নদী" বিশ্বের একটি জনপ্রিয় ও বিখ্যাত নদী। প্রায় ১৪ হাজার ২৫০ ফুট বর্গ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যসহ টেমস নদীটি প্রায় ২৯ কিলোমিটার প্রশস্ত। অবাক করা ব্যাপার হলো, লন্ডনের এ ঐতিহ্যবাহী নদীটিও মহাকাশ থেকে দৃশ্যমান হয়।