পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় কয়েকটি জায়গা।

রহস্যময় এ পৃথিবীর কিছু স্থান আছে যেগুলো বিস্মিত করেছে বিজ্ঞানীদেরও। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এসব জায়গার রহস্য রয়ে গেছে অমীমাংসিত। তেমনই কিছু রহস্যময় জায়গা নিয়েই আজকের আয়োজন।

সূচিপত্র:-

  • মগুইচেং
  • চান দা ইয়া
  • বারমুডা ট্রায়াংগেল
  • ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি
  • নেভাডা মরুভূমি
  • কানো ক্রিস্টেলস
  • ড্যান্সিং ফরেস্ট

মগুইচেং

মগুইচেং চীনের জিনঝিয়াং মরুভূমিতে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত ও জনশূন্য অঞ্চল। সেখাকার স্থানীয় লোকজনরা বেশ অস্বাভাবিক আর ভৌতিক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন বলে শোনা যায়। এমনকি বাঘের গর্জনও নাকি কেউ কেউ শুনেছেন। তবে এই শব্দের উৎস কেউই এখনো খুঁজে পাননি।

Mogui Cheng

ডিম পাড়া পাহাড়

চীনের রহস্যময় এক পাহাড়ের নাম চান দা ইয়া। মান্দারিন ভাষায় এ নামের বাংলা করলে দাঁড়ায় 'ডিম পাড়া পাহাড়'। এই পাহাড়ের পুরোটাই অবশ্য ডিম পাড়ে না। এর ছোট্ট একটি অংশ ডিম পাড়ে। একেকটা ডিম পাড়তে চান দা ইয়ার প্রায় ৩০ বছর লেগে যায়। তারপর ডিম পরিপূর্ণ রূপ লাভ করলে, পাহাড়ের গা থেকে খসে পড়ে। তবে ডিমগুলো সত্যিকারের নয় বরং পাথরের তৈরি। এগুলো গোল ও মসৃণ হওয়ায় একে ডিম ভেবে অনেকেই ভুল করেন। এগুলো আসলে পাথর যা এমন আকার ধারণ করেছে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে। তবে পাহাড় কি করে ডিম পাড়তে পারে সে প্রশ্নের উত্তর এখনো ঠিকমতো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বারমুডা ট্রায়াংগেল

আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে বারমুডা ট্রায়াংগেল বলে। পৃথিবীর রহস্যময় অঞ্চলের তকমা জুটেছে এই অঞ্চলটির। স্থানীয় অধিবাসীরা এই অঞ্চলটিকে ডেভিলস ট্রায়ঙ্গাল বা শয়তানের ত্রিভুজ বলে থাকেন। এই বিশাল অঞ্চলে কত জাহাজ, বিমান নিরুদ্দেশ হয়েছে তার কোন হেসাব নেই। কোনও জাহাজ এই অঞ্চলের গভীরে প্রবেশ করলেই বেতার তরঙ্গ আর পাঠাতে পারে না। ফলে উপকূলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকেনা। এক সময়ে দিক নির্ণয় করতে না পেরে রহস্য জনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিজ্ঞানীগণ এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তবুও এখন পর্যন্ত স্বীকৃত কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। সবকিছু নিছক অনুমান।

বারমুডা ট্রায়াংগেল

ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি

ম্যাকমার্ডো ড্রাই ভ্যালি বরফের দেশ এন্টার্কটিকার মধ্যস্থলে অবস্থিত একটি জায়গা। অনেকের মতে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গোপনীয় স্থান। মনুষ্যহীন এই উপত্যকাটি বিশ্বের অন্যতম একটি শুষ্ক মরুভূমি। গড় বৃষ্টিপাত খুবই কম। এই ভ্যালিটি মূলত মেরু অঞ্চলের বরফ দিয়ে ঢাকা। কিছু শৈবাল ও মস জাতীয় উদ্ভিদ ছাড়া আর কোনো উদ্ভিদ জন্মায় না। বিজ্ঞানীদের মতে, এই স্থানের সঙ্গে মঙ্গল গ্রহের পরিবেশের অনেকটা মিল রয়েছে।

নেভাডা মরুভূমি

যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা মরুভূমিতে অবস্থিত এক রহস্যময় পাহাড় ফ্লাই গেইসার। তিনটি ছোট ছোট পাহাড়ের সমন্বয়ে এটি গঠিত। পাহাড় গুলো প্রতিনিয়ত ওপরের দিকে ছিটিয়ে যাচ্ছে। ফ্লাই গেইসারের গায়ে যে মহনীয় রঙ তা মুগ্ধ করে সকলকেই। কিন্তু এটা বক্তিগত সম্পত্তির ওপর হওয়ায় এখনো পৃথিবীর কাছে গোপন একটি জায়গা। ইচ্ছে থাকলেও কোনো পর্যটকের যাবার অনুমতি নেই সেখানে।

ড্যান্সিং ফরেস্ট

ড্যান্সিং ফরেস্ট

পোল্যান্ডে অবস্থিত ড্যান্সিং ফরেস্ট দেখলে মনে হয় যেন গাছগুলো নৃত্যের বেশ ধরে দাড়িয়ে রয়েছে যুগ যুগ ধরে। গাছগুলোর বিশেষত্ব হলো, সেগুলো নিচ থেকে সমকোণে বেঁকে যায়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো সব গাছগুলো একদিকে ঝুঁকে রয়েছে। ১৯৩০ সালে গাছগুলো কীভাবে রোপন করা হয়েছিলো সে তথ্য অবশ্য কারো জানা নেই। কিন্তু বর্তমানে সেখানে লাগানো গাছগুলো আবার স্বাভাবিকভাবেই বড় হয়। রহস্যময় হলেও জঙ্গলটি দেখতে অসাধারণ। এছাড়াও জঙ্গলটিতে রয়েছে বিরল প্রজাতির সব গাছপালা। আর এ কারণেই বিশ্বব্যাপী পরিচিত এটি। বিজ্ঞানীরা অনেক চেষ্টা করেও সে রহস্য আজো ভেদ হয়নি। স্থানীদের মতে, মধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণেই গাছগুলো বেঁকে গেছে।

কানো ক্রিস্টেলস

কানো ক্রিস্টেলস কলম্বিয়ার প্রকৃতির গুপ্তধন সমৃদ্ধ এক নদী। নদীটি পাঁচটি দর্শনীয় রঙে রঙিন। এছাড়াও এটি জীব-বৈচিত্র্যে ভরপুর আর সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। দেখলে মনে হবে সৃষ্টিকর্তা তার নিপুণ হাতে পৃথিবীর এক কোণে রঙ ঢেলে সাজিয়েছেন নদীটিকে। বছরের বেশিরভাগ সময় নদীটি স্বাভাবিক থাকে। তবে সেপ্টেম্বর এবং নভেম্বরের মাঝামাঝি এসে এটি বদলে যায়। এ সময় নদীর পানি লাল, নীল, গোলাপি, সবুজ এবং হলুদ রঙের এর অপূর্ব সমন্বয় ভেসে উঠে।


Next Post Previous Post
1 Comments
  • অম্রিতা
    অম্রিতা ১১ অক্টোবর, ২০২৪ এ ১০:২৯ PM

    গোছানো সুন্দর লিখা।

Add Comment
comment url